আজ বনধে ছাড়, ডুয়ার্সে পিছু হটল মোর্চা
আজ বনধে ছাড়, ডুয়ার্সে পিছু হটল মোর্চা; ১৪ জানুয়ারি ২০১১; একদিন পত্রিকায় প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদন: টানা চার দিনের বনধের দ্বিতীয় দিনেই ডুয়ার্সে বিরোধিতার মুখে পড়তে হল মোর্চাকে। সাধারণ মানুষের ধর্মঘট উপেক্ষা করার ‘ট্রেন্ড’ দেখে মোর্চা শুক্রবার ২৪ ঘন্টার জন্য ডুয়ার্সে বনধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। যদিও ‘ডুয়ার্স ডে’র জন্য এই সিদ্ধান্ত বলে মোর্চারা নেতারা সাফাই দিয়েছেন। ডুয়ার্সে বিরোধিতা হলেও, পাহাড় ও শিলিগুড়ির একাংশে বৃহস্পতিবার জনজীবন অচল। তবে মোর্চা ও জিএনএলএফের মধ্যে গোলমালও হয়। বনধ সফল করতে মোর্চা সমর্থকরা অবরোধ করে। তাছাড়া পুরমন্ত্রীর কুশপুতুলও পোড়ানো হয়।
৯৬ ঘন্টার বনধের প্রথম দিন অচল থাকলেও, বৃহস্পতিবার ডুয়ার্স জুড়ে সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র ধরা পড়েছে। যদিও পাহাড়ের তিন মহকুমায় বৃহস্পতিবার বনধ সর্বাত্মক হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই ডুয়ার্সে জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করে। মালবাজার, ওদলাবাড়ি, নাগরাকাটার মতো পুরো ডুয়ার্সে অধিকাংশ দোকানপাট খুলেছিল। চালসা, মেটেলি, বানারহাটের চামুর্চি, বাগরাকোট, মাদারিহাট, বীরপাড়া ও কালচিনিতে ধর্মঘটের কোনও প্রভাব চোখে পড়েনি। স্কুল-কলেজ ও অফিস খোলা ছিল। সেখানে উপস্থিতির হারও লক্ষ্যণীয় ছিল। শিলিগুড়ির একাংশে বনধের প্রভাব পড়লেও, সালুগারাতে জনজীবন স্বভাবিক ছিল। চা-বাগানেও স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। চা-বাগানে কাজ যোগ দিতে যাওয়া জিএনএলএফ সমর্থকদের সঙ্গে মোর্চার সদস্যদের সংঘর্ষও হয়। পানিঘাটার লোহাগড়ে এই ঘটনায় পুলিশ গিয়ে ইচ্ছুক শ্রমিকদের চা-বাগানে পৌঁছে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মালবাজার থেকে শিলিগুড়ি ও নাগরাকাটা রুট দু’টিতে গাড়ি না চললেও, জলপাইগুড়ি রুটে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক ছিল। ডুয়ার্সের অন্যান্য রাস্তায় গাড়ি সংখ্যা কম ছিল। মাদারিহাটে বনধের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমেছিল মাদারিহাট জনজাগরণ মঞ্চ। পাহাড়েরও বনধের বিরোধিতায় বৃহস্পতিবার দার্জিলিং জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকারের নেতৃত্বে সিপিএম মিছিল করে। বনধ নিয়ে নীরব থাকায় কংগ্রেস এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে সিপিএম তোপ দাগে।
তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ-প্রশাসন তৎপর ছিল। অবরোধ তুলতে প্রশাসনের অনুরোধকে উপেক্ষা করেন মোর্চাপন্থীরা। বনধের সমর্থনে রাস্তায় নামা ২৫০ মোর্চা সমর্থকদের পুলিশ এদিন গ্রেফতার করেছে। মাদারিহাটে বেলা বারোটা নাগাদ বীরপাড়ার আইসি সুধাংশু বর্মন বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়ে শ’দেড়েক মোর্চা সমর্থককে গ্রেফতার করে অবরোধ তুলে দেন। নাগরাকাটা থানার পুলিশ খুনিয়া মোড় থেকে যুব ও নারী মোর্চার ১৮৫ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। রাঙামাটিতে ৬৫জন গ্রেফতার হয়েছেন। জাতীয় সড়ক অবরোধ করার দায়ে ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পুলিশকে এ নিয়ে মামলা রুজু করেছে। সমস্ত আটককে পরে জলপাইগুড়ির কোতয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। থানায় আটক মোর্চা সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখায়। টানা ১৫ দিন অবরোধ চলবে যুব নারী মোর্চার সদস্যরা জানিয়ে দিয়েছেন। গোলমালের আশঙ্কায় প্রত্যেককে ব্যক্তিগত জামিনে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে। মোর্চা পুলিশের এই পদক্ষেপ সিপিএমের চক্রান্ত বললেও, জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার আনন্দকুমার সাফ জানিয়েছেন, জাতীয় সড়ক অবরোধ করা বেআইনি। অবরোধ তুলতে আর্জি জানানোর পরেও কথা না শোনায় পুলিশ গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়।
No comments